অনলাইন শ্রমবাজার বা ফ্রিল্যান্সিং খাতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। মোট অনলাইন শ্রমবাজার বাংলাদেশের অংশ প্রায় ১৬ শতাংশ। গত এক বছরে দেশে ই-কমার্স খাতেও প্রায় এক লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৭ লাখ মানুষ ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশে বসে বিশ্বের উন্নত দেশের কাজ করতে শুরু করে। তবে বিদেশ থেকে টাকা আনা নিয়ে হাজারও ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়, যেগুলো এখন অনেকটাই ঠিক হয়ে এসেছে। কিন্তু এগুলো আরও ১০ বছর আগেই ঠিক হয়ে যেতে পারত। শুধু নীতিগত কারণে পিছিয়ে যাওয়া। বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সিং ক্ষেত্রে বেশ ভালো একটি জায়গা করে নিয়েছে। এ কাজটিতে বাংলাদেশ আরও ভালো করতে পারত, যদি প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেটের ভালো গতি পৌঁছে দেওয়া যেত এবং ডিজিটাল পেমেন্টাকে সহজতর করা যেত।
এ দশকেও বাংলাদেশ তার ইন্টারেনেটের গতি ঠিক করতে পারেনি। বাংলাদেশের মানুষ দুই উপায়ে ইন্টারনেট পেয়ে থাকে। একটি হলো, ফাইবার অপটিক ব্রডব্যান্ড, আরেকটি হলো, মোবাইল ইন্টারনেট। বাংলাদেশে পরিকল্পিত উপায়ে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠেনি। ঢাকার চেয়ে জেলা শহরগুলোতে ইন্টারনেটের গতি কম। সরকারঘোষিত এক দেশ এক রেট-এর সফল বাস্তবায়ন। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত এখনো ঢাকাকেন্দ্রিক। ঢাকায় কিছু কিছু এলাকা ফাইবারের আওতায় এসেছে। কিন্তু সেগুলো আন্তর্জাতিক মানের করতে হবে।
আর মোবাইল ইন্টারনেটের অবস্থা এখনো খারাপ, সেটি তো আমরা সবাই জানি। ঢাকা শহরের মানুষ কিছুটা গতি পেলেও ঢাকার বাইরের অবস্থা খুবই নাজুক। এটি মূলত হয়েছে মোবাইল অপারেটররা ঢাকার বাইরে তেমন বিনিয়োগ করেনি, বাংলাদেশের মানুষ জেলা শহরেই অনেক সময় ভালো নেটওয়ার্ক পায় না। তথ্যপ্রযুক্তি খাত প্রাইভেট সেক্টরে প্রসারিত হওয়ার জন্য যেই অবকাঠামোর প্রয়োজন ছিল, তা এখনো তৈরি হয়নি।
তথ্যপ্রযুক্তি হলো এমন একটি খাত, যেখানে বুদ্ধির প্রয়োজন হয়। এর জন্য চাই প্রকৃত বুদ্ধিমান মানুষ। কিন্তু বাংলাদেশ এখন বড় ধরনের ‘ব্রেইন-ড্রেইন’-এর ভেতর পড়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ভালো দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে যাচ্ছে। ফলে, সেবা তৈরি করার মতো মানুষ এ দেশে থাকছে না। আমরা মূলত কনজ্যুমার হচ্ছি। আমাদের যদি প্রস্তুতকারকের ভূমিকায় আসতে হয়, তাহলে আরও বুদ্ধি লাগবে। আর তৃতীয়টি হলো, ইন্টিলেকচুয়াল কপিরাইট প্রটেকশন, যা বাংলাদেশে এখনো বেশ দুর্বল। মেধাস্বত্ব যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা না যায়, তাহলে মেধাবীরা এখানে থাকবে না। আর এ শিল্পে মেধার কোনো বিকল্প নেই।
দেশে ইন্টারনেট প্রাপ্তি সহজ হওয়ায় ডিজিটাল অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। গত এক বছরে দেশে ই-কমার্স খাতে প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আগামী এক বছরে আরও পাঁচ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ভারতের পর বর্তমানে অনলাইন কর্মসংস্থানে বাংলাদেশের অবস্থান এবং বিশ্বে দ্বিতীয়। করোনার কারণে যারা চাকরি হারিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই উদ্যোক্তা হিসেবে ই-কমার্সে প্রবেশ করেছেন।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রধান হাতিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি। এখন যারা বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি পরিবহন সুবিধা দিচ্ছে, তাদের নিজস্ব কোনো যানবাহন নেই। যারা সবচেয়ে বড় হোটেল নেটওয়ার্ক সুবিধা দিচ্ছে, তাদের নিজস্ব কোনো হোটেল নেই। প্রতিদিন নিত্যনতুন প্ল্যাটফরম তৈরি হচ্ছে। নতুন নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে। একই অবস্থা বাংলাদেশেও। দিনে দিনে অনলাইন লেনদেনও ব্যাপক বেড়েছে। দেশের বর্তমানে প্রায় ৫ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করছে। এ খাতেও বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। ফেসবুককেন্দ্রিক উদ্যোক্তা ৫০ হাজার, ওয়েবসাইটভিত্তিক উদ্যোক্তার সংখ্যা দুহাজার। দেশে এখন ক্রিয়েটিভ ও মালটিমিডিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন ১৯ হাজার ৫৫২ জন।
এ খাতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যে ডিজিটাল প্ল্যাটফরমগুলো তৈরি হচ্ছে, তার জন্য রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক আছে কি না; এ খাতের জন্য ইনটেনসিভ আছে কিনা; নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য কোনো রাজস্ব ছাড় আছে কিনা; এরা করজালে আসছেন কিনা-তা দেখতে হবে। এটাকে এটা সুষ্ঠু প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। ই-কমার্স একটি উদীয়মান খাত। এ খাতে শুধু ভোক্তার স্বার্থই নয়, উদ্যোক্তার সুবিধা নিশ্চিতেও একটি নীতিমালা অপরিহার্য। এ ছাড়া এলডিসি উত্তরণে ডিজিটাল প্ল্যাটফরম ইকোনমি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য বিদ্যমান বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্মিলিতিভাবে কাজ করতে হবে।
আর উদ্যোক্তাদের জন্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে, ডিজিটাল ডিভাইসের অভাব। দেশে গরিব জনসংখ্যার প্রতি এক হাজার জনের মধ্যে চারজনের কম্পিউটার রয়েছে। এ ছাড়া, নীতি সহায়তার অভাব, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধার অভাব, ইন্টারনেটের ধীর গতি, বিনিয়োগ, ইংরেজি ভাষার দক্ষতার অভাব, কারিগরি জ্ঞানের অভাব। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলা করতে হলে দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে আরও সহজভাবে সেবা দিতে হবে। একই সঙ্গে একটি জাতীয় নীতিমালাও তৈরি করতে হবে। এ খাতকে এগিয়ে নিতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কর অব্যাহতি দিতে হবে।
বিদেশি বিভিন্ন প্ল্যাটফরমে কাজ করে আয় করায় উৎসাহ বাড়াতে ফ্রিল্যান্সারদের প্রাথমিকভাবে ৫৫টি স্বীকৃত প্ল্যাটফরম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এসব অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করে আয় করলে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ৪ শতাংশ নগদ প্রণোদনা পাচ্ছেন ফ্রিল্যান্সাররা। বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলারে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ স্বীকৃত এসব মার্কেটপ্লেসের তালিকা প্রকাশ করে। ব্যক্তি পর্যায়ের ফ্রিল্যান্সাররা সফটওয়্যার ও আইটিইএস সেবা অনলাইন মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে রপ্তানি করে থাকে। সফটওয়্যার ও আইটিইএস সেবা রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা পেতে হলে সংশ্লিষ্ট অনলাইন মার্কেটপ্লেসকে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক স্বীকৃত হওয়ার শর্ত রয়েছে।
মার্কেটপ্লেসের ওই তালিকায় নাম রয়েছে, আপওয়ার্ক, ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার ডটকম, গুরু, পিপল পার আওয়ার, টপটাল, ফ্লেক্সজব, ৯৯ ডিজাইনস, অ্যাকুয়েন্ট, পাবলফট, ডিজাইনহিল, বার্ক, গোলেন্স, ফ্রিআপ, হাবস্টাফ ট্যালেন্ট, সলিড গিগস, উই ওয়ার্ক রিমোটলি, গিগস্টার, ড্রিববল, বিহেন্স, ক্লাউডপিপস, এনভাটো, হ্যাকারন, আমাজান মেকানিক্যাল টার্ক, শাটারস্টক, অ্যাডোবি স্টক, আই স্টক, ডিপোজিট ফটোসস, ১২৩ আরএফ, পন্ড৫, ড্রিমসটাইম, ক্রিয়েটিভ মার্কেট, ক্যানস্টকফটো, অ্যালামি, ইউনিটি অ্যাসেট স্টোর, স্কেচফ্যাব, ফ্রিপিক, অ্যাউইন, শেয়ারঅ্যাসেল, ফ্লেক্সঅফারস, ম্যাক্সবাউন্টি, ট্রেডডাবলার, সিজে অ্যাফিলিয়েট, ভিগলিংক, জেভিজু, রাকুটেন, ক্লিকব্যাংক, আমাজন অ্যাসোসিয়েটস, ওয়ালমার্ট অ্যাফিলিয়েট, গুগল অ্যাডসেন্স, ফেসবুক মনিটাইজেশন, ইউটিউব মনিটাইজেশন, অ্যাপস্টোর ও প্লেস্টোর।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস শোয়াব ২০১৫ সালে ফরেন অ্যাফেয়ার্সে প্রকাশিত একটি নিবন্ধের মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব শব্দটিকে বৃহৎ পরিসরে সামনে নিয়ে আসেন। শোয়াব তখন এমন সব প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করেন, যার মাধ্যমে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও বায়োলজিকে (সাইবার-ফিজিক্যাল সিস্টেমস) একত্র করে পৃথিবীকে উন্নতির পথে আরও গতিশীল করা যায়। শোয়াব মনে করেন, যুগটি রোবোটিক্স বুদ্ধিমত্তা, ন্যানোটেকনোলজি, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, বায়োটেকনোলজি, ইন্টারনেট অব থিংস, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্টারনেট অব থিংস, ডিসেন্ট্রালাইজড কনসেনসাস, পঞ্চম প্রজন্মের ওয়্যারলেস প্রযুক্তি, থ্রিডি প্রিন্টিং ও সম্পূর্ণ ড্রাইভারবিহীন গাড়ি উদীয়মান প্রযুক্তির যুগান্তকারী যুগ হিসেবে চিহ্নিত হবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চতুর্থ শিল্প বিপ্লব; যার গতির দৌড় কল্পনার চেয়েও বেশি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবটির ভিত হচ্ছে ‘জ্ঞান ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’ ভিত্তিক কম্পিউটিং প্রযুক্তি। রোবোটিক্স, আইওটি, ন্যানো প্রযুক্তি, ডাটা সায়েন্স ইত্যাদি প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে নিয়ে যাচ্ছে অনন্য উচ্চতায়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে কর্মবাজারে। অটোমেশন প্রযুক্তির ফলে ক্রমে শিল্প-কারখানা হয়ে পড়বে যন্ত্রনির্ভর। টেক জায়ান্ট কোম্পানি অ্যাপলের হার্ডওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফক্সকন এরই মধ্যে হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করে তার পরিবর্তে রোবোটকে কর্মী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বিপুল পরিমাণ মানুষ চাকরি হারালেও এর বিপরীতে সৃষ্টি হবে নতুন ধারার নানা কর্মক্ষেত্র। নতুন যুগের এসব চাকরির জন্য প্রয়োজন উঁচুস্তরের কারিগরি দক্ষতা। ডাটা সায়েন্টিস্ট, আইওটি এক্সপার্ট, রোবোটিক্স ইঞ্জিনিয়ারের মতো আগামী দিনের চাকরিগুলোর জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী তরুণ জনগোষ্ঠী। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা অনুযায়ী, আগামী দুই দশকের মধ্যে মানবজাতির ৪৭ শতাংশ কাজ স্বয়ংক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে শ্রমনির্ভর এবং অপেক্ষাকৃত কম দক্ষতানির্ভর চাকরি বিলুপ্ত হলেও উচ্চ দক্ষতানির্ভর যে নতুন কর্মবাজার সৃষ্টি হবে, সে বিষয়ে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে তার জন্য প্রস্তুত করে তোলার এখনই সেরা সময়। দক্ষ জনশক্তি প্রস্তুত করা সম্ভব হলে জনমিতিক লভ্যাংশকে কাজে লাগিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল ভোগ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্য অনেক দেশ থেকে অনেক বেশি উপযুক্ত।
এক্ষেত্রে আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হতে পারে জাপান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে আজকের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপান পৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছে শুধু মানবসম্পদকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক ও সার্বিক জীবনমানের উত্তরণ ঘটানো যায়। জাপানের প্রাকৃতিক সম্পদ অত্যন্ত নগণ্য এবং আবাদযোগ্য কৃষিজমির পরিমাণ মাত্র ১৫ শতাংশ।
জাপান তার সব প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা অতিক্রম করেছে জনসংখ্যাকে সুদক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করার মাধ্যমে। জাপানের এ উদাহরণ আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী। বাংলাদেশের সুবিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে পারলে আমাদের পক্ষেও উন্নত অর্থনীতির একটি দেশে পরিণত হওয়া অসম্ভব নয়।
শিল্প-কারখানায় কী ধরনের জ্ঞান ও দক্ষতা লাগবে, সে বিষয়ে আমাদের শিক্ষাক্রমের তেমন সমন্বয় নেই। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মোকাবিলায় শিক্ষা ব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজাতে হবে। সারা দেশে সাশ্রয়ী মূল্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি অফিসের ফাইল-নথিপত্র ডিজিটাল ডকুমেন্টে রূপান্তর করতে হবে। আর নতুন ডকুমেন্ট ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে তৈরি করে সংরক্ষণ এবং বিতরণ করতে হবে।
এ বিষয়ে বর্তমানে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে, তবে সুনির্দিষ্ট ও বিস্তারিত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব এখনো অনেকটা অনুপস্থিত মনে হয়। কেবল পরিকল্পনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের মানবসম্পদকেও যথাযথভাবে প্রস্তুত করতে হবে এ পরিবর্তনের জন্য। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আইওটি, ব্লকচেইন এসব প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে। এসব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, পণ্য সরবরাহ, চিকিৎসা, শিল্প-কারখানা, ব্যাংকিং, কৃষি, শিক্ষাসহ নানা ক্ষেত্রে কাজ করার পরিধি এখনো তাই ব্যাপকভাবে উন্মুক্ত।
সরকার ও সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বেসিস চাইছে, এই ফ্রিল্যান্সাররা এখন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠুক। এতে কর্মসংস্থান বাড়বে, আরও নতুন ফ্রিল্যান্সার আসবে। ফ্রিল্যান্সিংকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিলে তা তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। সরকার স্টার্টআপদের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। ব্যাংকও এ খাতে কাজ করছে। অর্থাৎ বাজার তৈরি রয়েছে। বেসিস থেকে ফ্রিল্যান্সারদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিংকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য সুবিধাও ঘোষণা করা হয়েছে।
যেমন- ব্যাংক এশিয়া থেকে ফ্রিল্যান্সারদের সুবিধা দিতে বেসিসের সঙ্গে মিলে স্বাধীন নামে প্রি-পেইড কার্ড চালু করা হয়েছে। এ কার্ডের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা বিদেশ থেকে দেশে লেনদেন করতে পারছেন।