হীরেন পণ্ডিত: সতেরো শতকের মাঝামাঝি বাউলমতের উন্মেষের পর বিস্তরণশীল এ লৌকিক সম্প্রদায়ের প্রবল উপস্থিতি টের পাওয়া যায় উনিশ শতকে এসে বাংলাদেশের কুষ্টিয়ায়। সাধনসঙ্গীত ও ভাবান্দোলনে মরমী-সুফি চিন্তার যোগফলে যে বাউলধর্মের উদ্ভব, তাতে আমরা নতুন মৌলিক ঐতিহ্যে ভরপুর একটি স্বতন্ত্র সাহিত্যপ্রবাহ পেয়েছি। বাউল সঙ্গীত পেয়েছি। এ ধর্মের সাধন-ভজন সঙ্গীত দিয়ে। এই সাহিত্য সঙ্গীতাশ্রয়ী।
কুষ্টিয়ায় লালন ফকিরের সাধনা ও সৃষ্টি বাউল সম্প্রদায়ের বাতিঘর প্রতিষ্ঠা করে। লালনের গানের বাণী ও সুর সারা বাংলায় প্রভাব বিস্তার করে। লালন-পরববর্তী সময়ে আমরা পেয়েছি হাছন রাজা, রাধারমণ দত্ত, পাগলা কানাই, কাঙাল হরিনাথ, গগন হরকরা, দুদ্দু শাহ, শানাল ফকির, আলেফচান দেওয়ান, খালেক দেওয়ান, মহিন শাহ, শীতলং শাহ, মনোমোহন দত্ত, পাঞ্জুশাহ, উকিল মুন্সী, রশিদউদ্দিন, সৈয়দ শাহনূর, জালাল খাঁ, শাহ আবদুল করিমসহ শত শত বাউল সাধকের সৃষ্টি সম্ভার। বাউলগান বাঙালির মানস ফসল, বাঙালির আত্মদর্শন। বাউলগান তত্ত্বসাহিত্য। যোগসাধনে মরমী এ সাহিত্য সময়ভেদে অঞ্চলভেদে বৈচিত্র্যপূর্ণ। এই বৈচিত্র্য স্থানভেদে আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবোধেরই পরিচায়ক।
ঢাকা, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের বাউল সাধকরা সংসার ধর্মে বিশ্বাসী। সমকালীন সমাজ ভাবনার কিঞ্চিত দূরে থেকে, গান সাধনা করে পুনরায় সংসারে মনোনিবেশ করেন তারা। এজন্য তারা গৃহী বাউল হিসেবে পরিচিত। তথাপি, সমাজের অন্য দশটা মানুষের মতো শ্রম ও সাধনা দিয়ে পারিবারিক উন্নয়নের কোনো ভাবনা তাদের নেই।
বাউল শিল্পী বা বাউল সাধকরা একটি বিশেষ ধরনের গোষ্ঠী ও লোকাচার সংগীত পরিবেশক, যারা গানের সঙ্গে সুফিবাদ, দেহতত্ত্ব ইত্যাদি মতাদর্শ প্রচার করে থাকেন। বাংলাদেশে ভাবসঙ্গীত ও মরমী কিংবা সুফি চিন্তার ফলে বাউল দর্শনের উদ্ভব হয়েছে।
নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুড়ি উপজেলার নূরপুর বোয়ালখালী গ্রামে ১৮৮৫ সালের ১১ জুন একটি ধনাঢ্য মুসলিম পরিবারে উকিল মুন্সী জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পারিবারিক নাম আব্দুল হক আকন্দ। শৈশবে তিনি ঘেটুগানে যোগ দেন। বিভিন্ন শিল্পীর কণ্ঠে মরমী বাউল উকিল মুন্সীর গান গণমাধ্যম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রচার হয়।
বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল ছেলে বড় হয়ে একজন উকিল হবে। তাই তারা ছোটবেলা থেকেই আদর করে তাঁকে উকিল নামে ডাকতেন। কিন্তু কালের পরিক্রমায় উকিল নামের মানুষটি মসজিদে ইমামতি করলে তাঁর নামের শেষে ‘মুন্সী’ শব্দটি যোগ হয়। আর এভাবেই তিনি আব্দুল হক আকন্দ থেকে হয়ে ওঠেন উকিল মুন্সী।
অনেকেই প্রশ্ন করেন, তাঁর নাম তো ছিল আব্দুল হক আকন্দ, তিনি কীভাবে উকিল মুন্সী হলেন? উকিল নামটা শৈশবেই তাঁর ডাকনাম হিসাবে যুক্ত হয়ে যায়। মায়ের নাম ছিল উকিলেন্নেসা। তাঁর মা চাইতেন ছেলে লেখাপড়া করুক, উকিল হোক। আইনের লোক হোক। মসজিদে ইমামতি করার পরে মুন্সী যুক্ত হয়েছে। আবার এলাকার বয়স্ক ব্যক্তিদের অলোচনায় জানা যায়, তিনি যে কোনো বিষয়ে ভালো যুক্তি দিতে পারতেন, যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিতে পারতেন, তাই উকিল সাহেব নামে আখ্যায়িত করেন সবাই, আবার মসজিদে ইমামতি করতেন এজন্য সবাই তাঁকে মুন্সী ডাকতেন, এভাবেই তিনি উকিল মুন্সী নামে পরিচিত হন।
তিনি বিচিত্র এবং নির্মোহ জীবনযাপন করেছেন। একদিকে মসজিদের ইমামতি, অন্যদিকে সুরের সাধনায় তিনি এ অঞ্চলের মানুষের জীবনকেই হাজির করেছেন গানে। আব্দুল মজিদ নামে তার এক ছোট ভাই ছিল। পিতা-মাতা চেয়েছিলেন ছেলে লেখাপড়া শিখুক; কিন্তু বিধি বাম। শৈশবেই বাবাকে হারান। গৃহশিক্ষকের কাছে তিনি শৈশবেই বাংলার পাশাপাশি আরবি, ফারসি ও পবিত্র কোরআন শিক্ষা নেন। পিতাকে হারানোর পর পড়াশোনা আর বেশিদিন করা হয়নি উকিল মুন্সীর।
উকিল মুন্সীর বয়স যখন ১০ বছর, তখন তাঁর বাবা মারা যান এবং তিনি এতিম হয়ে পড়েন। মা পাশের গ্রামে পুনরায় বিয়ে করে চলে গেলে উকিল মুন্সী বাধ্য হয়েই মায়ের কাছে যান। ওখানেই থাকতেন। পরে তাঁর এক সৎভাই জন্মগ্রহণ করে, যার ফলশ্রুতিতে তাঁর আদর-যতেœর অভাব আরও বেড়ে যায়। অবহেলার শিকার হন তিনি। অভিমানে চলে আসেন নিজ বাড়ি বোয়ালীতে।
এরপর ফুফুর বাড়িতে কিছুদিন। আবার নিজ গ্রামে ফেরা। এরপর পড়াশোনাও আর বেশি দিন করা হয়নি। অভাব-অনটন, অবহেলা-অনাদরে কাটতে থাকে তাঁর দিন। জমি-জমা ধীরে ধীরে বিক্রি করে সাময়িক ও বৈষয়িক অভাব দূর হয়। কিন্তু অন্তরে তাঁর তৈরি হয় ভালোবাসাহীনতার এক প্রবল তৃষ্ণা। এই অতৃপ্তি, না পাওয়ার শূন্যতা তাঁকে ঘরছাড়া করে। বাবা-মা কেউ না থাকায় তিনি অবাধ স্বাধীন থাকলেও মনের মধ্যে শুরু হয় গভীর শূন্যতা।
তৎকালীন সময়ে ওই অঞ্চলে ঘাটু গানের খুব প্রচলন ছিল। উকিল মুন্সী নিয়মিত বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে সারারাত ঘাটু গান শুনতেন। গান তাঁর অন্তরকে নাড়া দেয়। ঠিক করলেন, নিজেই ঘাটু গান রচনা করবেন এবং গাইবেন। কিশোর উকিল মুন্সীর কণ্ঠ ছিল খুবই মধুর ও দরাজ। তাঁর গানে দর্শক-শ্রোতা মুগ্ধ হতো নিমিষেই। দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহসহ মূলত ভাটি অঞ্চলে বর্ষাকালে ঘাটু গান পরিবেশন করতে থাকেন। অল্প সময়েই দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন চারিদিকে। তিনি নিজের মধ্যে সুর বাঁধেন, সুর লালন করতে থাকেন।
বাংলাদেশের এই বাউল সাধক এক হাজারেরও বেশি গান লিখেছেন। বর্তমানে বেশিরভাগ গানের সন্ধান পাওয়া যায় না। তাঁর জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘আষাঢ় মাইস্যা ভাসা পানিরে’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘লিলুয়া বাতাসে’ ‘সুয়া চান পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছো নাকি’, ‘ভেবেছিলাম রঙে দিন যাবেরে সুজন নাইয়া’, ‘ও কঠিন বন্ধুরে’ ‘আমার কাংখের কলসী গিয়াছে ভাসি’সহ অসংখ্য কালজয়ী গান রচনা করে গেছেন। তাঁর গুরু ছিলেন আরেক বাউল সাধক রশিদ উদ্দিন।
উকিল মুন্সীর অনেক জনপ্রিয় গান আজও উচ্চারিত হয় সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। তাঁর অনেক গান বাংলা চলচ্চিত্রে সংযোজন হয়েছে। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে কথাসাহিত্যিক ও চিত্রনির্মাতা হুমায়ূূন আহমেদের রচনা ও পরিচালনায় নির্মিত শ্রাবণ মেঘের দিন চলচ্চিত্রে বারী সিদ্দিকীর কণ্ঠে ব্যবহার করেন উকিলের গান। বিংশ শতাব্দীর গ্রামীণ বাংলার জীবনকে নিয়ে রচিত হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘মধ্যাহ্ন’র অন্যতম চরিত্র উকিল মুন্সী।
গজল ও পরিণত বয়স থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বাউল সাধনায় লিপ্ত থাকেন। তাঁর গজল গানের সূত্রপাত হয় তরুণ বয়সে। তাঁর চাচা কাজী আলিম উদ্দিনের বাড়ি মোহনগঞ্জ থানার জালালপুর গ্রামে বেড়াতে যান। সেখানে ধনু নদী পারের এক গ্রামের লবু হোসেনের মেয়ে হামিদা খাতুনের, লাবুশের মার প্রেমে পড়ে যান তিনি। এই প্রেম নিয়ে তিনি লেখেন ‘উকিলের মনচোর’ নামক একটি গান। তাঁর চাচা এই প্রেমের কথা জানার পর হামিদার বাবা সাধারণ কৃষক হওয়ায় তাঁকে পরিবার থেকে বাধা দেন।
তিনি বাড়ি ছেড়ে শ্যামপুর, পাগলাজোড়, জৈনপুরে ঘুরে বেড়ান। ১৯১৫ সালে জালালপুর গ্রাম থেকে কয়েক মাইল দূরে মোহনগঞ্জের বরান্তর গ্রামের এক মসজিদে ইমামতি ও আরবি পড়ানোর কাজে নিযুক্ত হন। ১৯১৬ সালে হামিদা খাতুনের আগ্রহে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক পুত্র, সাত্তার মুন্সী।
এই সময়ে ইমামতির পাশাপাশি গজল লিখতেন এবং রাত জেগে তা গাইতেন। এতে বিরক্ত হয়ে এক ব্যক্তি পুলিশের কাছে নালিশ করে। পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যেতে আসলে উকিল পুলিশ নিয়ে গান ধরেন। সে গানে পুলিশ তার নিজের ভিতরে লুকোনো কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায় এবং পরে কয়েকটি পালাগানের মঞ্চে উকিলের গান শুনে পুলিশ উকিলের মুরিদ হয়ে যায়।
গানের জগতে উকিল মুন্সী ছিলেন এক বিরহ গানের এক উল্লেখযোগ্য গানের পাখি। তিনি নারী-পুরুষের অন্তরের আকুতি, প্রেম-ভালোবাসা, সুখ-দুঃখ, বিরহ গাথা নিয়ে গান রচনা করতেন এবং সৃষ্টিকর্তাকে উদ্দেশ্য করে বিরহের অনুভূতি প্রকাশ করতেন। উকিল মুন্সীর জীবদ্দশায় সাধারণ মানুষ তাঁকে মরমী কবি উকিল মুন্সী, বাউল ফকির উকিল মুন্সী, দরদি বাউল উকিল মুন্সী, বাউল কবি উকিল মুন্সী ইত্যাদি নামে ডাকতেন। প্রকৃত অর্থে তিনি ছিলেন একজন বিরহী বাউল। তাঁর গান ও সুরে বিরহের ব্যাকুলতা প্রাধান্য পেয়েছে। হাওরাঞ্চলের বিচ্ছেদ গানের ধারায় তিনিই ছিলেন শ্রেষ্ঠ এবং আদরণীয়।
জীবদ্দশায় মোহনগঞ্জের জৈনপুর, গাগলাজুর, শ্যামপুর, আটবাড়ি বিভিন্ন জায়গায় দিনযাপন করেন তিনি। উকিল মুন্সীর বয়স যখন ৩০ বছর, তখন তিনি ইবাদতের জন্য মসজিদে চলে যান এবং সেখানে তিনি ইমামতি করেন ও ছেলেমেয়েদের আরবি পড়ান। নির্জনে উকিল মুন্সী নিজেই গজল রচনা করতেন এবং উচ্চৈঃস্বরে সুমধুর কণ্ঠে গাইতেন। গভীর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ শেষে তিনি সুমধুর কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত করতেন ও গজল গাইতেন। এভাবেই তিনি রাত পার করতেন।
কিশোর উকিল মুন্সীর মধুর ও দরাজ কণ্ঠে দর্শক-শ্রোতা নিমেষেই মুগ্ধ হতেন। উকিল মুন্সীর বয়স যখন ১৮-২০ বছর তখন থেকেই ঘাটু গানের দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বর্ষাকালে নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহসহ ভাটি অঞ্চলে গান পরিবেশন করতেন। সুমধুর কণ্ঠের কারণে তিনি খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
উকিল মুন্সী গান করতেন আর অঝোরে কাঁদতেন। শ্রোতাদেরকেও কাঁদিয়ে ভাসাতেন। শুধু একতারা সহকারে তিনি গান করতেন। তাঁর মতো দরাজ কণ্ঠের সমধুর মাধুর্যময় হৃদয়ভেদী বিরহী সুর দ্বিতীয়টি নেই। একজন বাউল মসজিদের ইমাম। এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার। এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে উকিলের ব্যক্তিত্ব, কর্ম ও দর্শনের কারণে। বক্তব্য ও অর্থে প্রেমের পথ বেয়ে স্রষ্টার প্রতি অন্তর্লীন প্রার্থনাময় তার গান, তাঁর তুলনাহীন সুরেলা গলা, তাঁর বিখ্যাত মোনাজাত, পা-িত্য তাঁকে ঈর্ষণীয় মর্যাদা দিয়েছে। বাউল দর্শন সম্পর্কে অবগত না হলেও বাউল গানের সঙ্গে বেড়ে ওঠা বাংলাভাষী প্রায় সকলের। চূড়ান্ত পর্যায়ে বাউল দর্শন সবখানে এক হলেও উপস্থাপন প্রক্রিয়া স্থান ভেদে ভিন্ন।
প্রয়াত নাট্যকার ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমায় দু’টি গান ব্যবহারের পর, হৃদয় স্পর্শ করা কথা ও সুরের জন্য গানগুলো মানুষের অন্তরে জায়গা করে নেয়। বিংশ শতাব্দীর গ্রামীণ বাংলার জীবনকে নিয়ে রচিত হুমায়ূন আহমেদের বহুকেন্দ্রিক উপন্যাস ‘মধ্যাহ্ন’র অন্যতম চরিত্র উকিল মুন্সী।
১৯৭৮ সালের মাঝামাঝিতে উকিল মুন্সীর স্ত্রী হামিদা খাতুন এবং এর কয়েক মাস পর ছেলে সাত্তার মুন্সী মৃত্যুবরণ করেন। মরমী এই কবি ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসের ১২ তারিখে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের জৈনপুর গ্রামে উকিল মুন্সীর স্মরণে তাঁর জীবন ও গান নিয়ে আলোচনা, প্রবন্ধ পাঠ, তাঁর রচিত জনপ্রিয় গানের সঙ্গীত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘উকিল মুন্সী স্মৃতি সংসদ’। তাঁর শেষ ইচ্ছা ও নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁকে জৈনপুর গ্রামের বেতাই নদীর কোলঘেঁষা বাড়ির উঠানে পুত্রের সমাধির পাশে দাফন করা হয়। পরে বেতাই নদীর পাড়ে মনোরম পরিবেশে ‘উকিল মুন্সী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ নির্মাণ করা হয়।
মরমী বাউল সাধক উকিল মুন্সী স্মৃতিকেন্দ্রের মাধ্যমে বাংলার আবহমান কালের প্রাচীন শিল্প-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যম-িত লোকসংগীত নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হবে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক উৎসবাদির আয়োজন করা হয়। উকিল মুন্সী স্মৃতি কেন্দ্রের মাধ্যমে নেত্রকোণা জেলার অন্যান্য বাউল শিল্পী, সাধক ও মনীষীর কর্মময় জীবন, লোকসংগীতে তাঁদের অবদান জনসমক্ষে তুলে ধরার লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করছে। এসব আয়োজনের লক্ষ্য বাংলার লোকায়ত সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক, উদার ও মানবতাবাদী চেতনায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। এক্ষেত্রে উকিল মুন্সীর মতো অসামান্য বাউল সাধক আমাদের জন্য অফুরন্ত প্রেরণার উৎস।